বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ। এদেশের অধিকাংশ পরিবার মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত। এ সকল পরিবারে টানাপোড়ন পরেই থাকে। এজন্য অনেকেই পড়াশোনা বাদ দিয়ে পরিবারের জন্য কাজ করতে বাধ্য হয়। তবে বর্তমানে আমাদের দেশে অনলাইনে বা অফলাইনে ছাত্রদের কাজ করার বা আয় করার বিভিন্ন পন্থা রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক ছাত্র অবস্থায় কিভাবে আয় করা যায়।
ছাত্র অবস্থায় কেন আয়ের পিছনে ছুটবেন?
ছাত্র অবস্থায় পার্ট টাইম জব করার নানাবিধ কারণ আছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এক্সট্রা আয় এর জন্য অনেক ছাত্র পার্ট টাইম বিভিন্ন জব বা অনলাইনে কাজ করে থাকে। নিজের খরচ ও ভবিষ্যতের বিভিন্ন চাহিদা পূরণের জন্য এ আয় অনেক কাজে লাগে। অর্থনৈতিক সচ্ছলতার পাশাপাশি ছাত্র জীবন থেকেই কাজ করার কারণে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অনেক বৃদ্ধি পায়। এসব অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে চাকরি নেওয়ার জন্য কাজে আসে। দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে পার্ট টাইম জবের কারণে বিভিন্ন নতুন নতুন মানুষের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়। এর থেকে তৈরি হয় নেটওয়ার্কিং। ছাত্র জীবন শেষে চাকরির জন্য বেকার হয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না। প্রয়োজনীয় সকল প্রকার অভিজ্ঞতা ছাত্র জীবন থেকেই আয়ত্ত চলে আসে।
ছাত্রজীবনে অনলাইনে আয়ের কিছু মাধ্যম
ছাত্র জীবনে করা যায় এমন অনেক পার্টটাইম জব বা অনলাইন জব বর্তমানে পাওয়া যায়। এর মধ্যে অনলাইন জব গুলো ঘরে বসেই করা যায়। এছাড়া অফলাইনেও বিভিন্নভাবে আয় করা যায় নিচে এ সম্পর্কে কিছু আইডিয়া দেওয়া হলো।
ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সিং শিক্ষিত জনগোষ্টির জন্য বর্তমানে একটি স্মার্ট পেশা। তবে ছাত্ররাও ফ্রিল্যান্সিং করতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য বিশেষ কোনো সার্টিফিকেট এর প্রয়োজন হয়না। যেকোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর অভিজ্ঞতা নিয়ে সে বিষয়ে অনলাইনের মাধ্যমে অন্য জনের কাজ করে দেওয়া যায়। অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলে এ পেশা ব্যাপক সম্ভাবনাময়।
কন্টেন্ট ক্রিয়েট
কন্টেন্ট ক্রিয়েশন একটি জনপ্রিয় পেশা। শিক্ষিতদের পাশাপাশি অল্পশিক্ষিত মানুষও এ পেশায় বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। ইউটিউব ও ফেসবুকের মাধ্যমেই মূলত অনেক মানুষ এপেশায় তাদের ভাগ্য বদলেছে। বিভিন্ন টপিকের উপর কোয়ালিটিফুল ভিডিও তৈরি করতে পারলে তাতে বিজ্ঞাপন প্রচার করে আয় করা যায়।
ইকমার্স
অনলাইনে ব্যবসার সংক্ষিপ্ত নাম হলো ইকমার্স। অল্প পূজিতেই চাইলে অনলাইনে প্রোডাক্ট বিক্রি করা যায়। গ্রাহক সংখ্যাও কম না। অনলাইনের কল্যাণে আপনার বিক্রি করা পণ্য পৌঁছে যেতে পারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল পেজ এর মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারলেই এই ব্যবসা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।
অনলাইন টিউটর
পার্ট টাইম অনলাইনে টিউশন করে টাকা আয় করা যায়। কোনো বিষয়ে ভালো পারদর্শী হলে সে বিষয়ে পার্সন টু পার্সন বা গ্রুপ করে জুম এপের মাধ্যমে ক্লাস করানো যায়। এছাড়াও ওয়েবসাইট তৈরি করেও ক্লাস করানো যায়। মাসিক বা এক কালীন কোর্স আকারেও এসকল কোর্সের ফি নির্ধারিত হয়ে থাকে।
ব্লগিং বা কন্টেন্ট রাইটিং
ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম জব হিসেবে কন্টেন্ট রাইটিং প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। নিজেই ব্লগ তৈরি করে বা ছোট বড় বিভিন্ন ব্লগিং সাইটে আর্টিকেল রাইটিং বা কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করা যায়। এর জন্য ধরাবাধা কোনো সময় নির্ধারণ করা নাই। এজন্য ছাত্রদের জন্য এটি বেশ সুবিধাজনক।
ছাত্রজীবনে অফলাইনে আয়ের মাধ্যম
অনলাইনের পাশাপাশি ওফলাইনেও বিভিন্ন কাজ করে টাকা আয় করা যায়। নিচে কিছু আইডিয়া দেওয়া হলো।
টিউশনি
নিজে পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে কিছু টিউশনি করার মাধ্যমে আয় করা যায়। এছাড়াও কোচিং করিয়ে বা কোনো কোচিং সেন্টারে পার্ট টাইম সময় দিয়েও আয় করা যেতে পারে।
প্রোডাক্ট ডেলিভারি
পার্টটাইম বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের প্রোডাক্ট কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দিয়ে ডেলিভারি চার্জ আদায়ের মাধ্যমে আয় করা যায়। ফুড পান্ডা, পেপার ফ্লাই, দারাজ এসব প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন পর পর ই ডেলিভারিম্যান নিয়োগ দেয়।
এছাড়াও বিভিন্ন নামিদামি হোটেলে শিক্ষিত ওয়েটার নেয় অর্ডার কালেকশন এর জন্য। বিভিন্ন কলসেন্টারে পার্টটাইম জব করা যায়। বিভিন্ন একাউন্টিং ফার্মে পার্ট টাইম সময় দেওয়ার মাধ্যমে আয় করা যেতে পারে।
0 Comments